ফেলনা নয় মাছের আঁশ, ৭০-৮০ টাকা কেজি!

মাছের বাজারে ক্রেতারা মাছ কিনে তার আঁশ ছড়িয়ে কেটে নিয়ে আসেন অনেকে। আর মাছ কেনা বা কাটার সময় তার আঁশ ফেলে দেওয়া হতো। কিন্তু আবর্জনা হিসেবে মাছের আঁশ ফেলে দেয়া হলেও এখন আর ফেলনা নয়। বরং এই আঁশের কদর বেড়েছে। এই ফেলনা মাছের আঁশ এখন বিক্রি হয়। আবার রফতানিও হচ্ছে বিদেশে। 

 

এই আঁশ প্রক্রিয়াজাত করে তৈরী হচ্ছে ওষুধের ফয়েল, বিভিন্ন প্রসাধনীসহ অনেক কিছু। আবার মাছ ও মুরগীর খাবারও তৈরী হচ্ছে। ফলে ফেলনা এই মাছের আঁশ বিক্রি করে বাড়তি আয় হচ্ছে এর কেনা-বেচার সাথে জড়িতদের।

 

তবে তারা বলছেন, বাজারে চাহিদা থাকলেও দিনাজপুর থেকে মাছের আঁশ সরাসরি রপ্তানির সুযোগ নেই। তাই ব্যবসায়ীরা বিক্রিত মাছের আঁশের কাঙ্খিত দাম পাচ্ছেন না। এক্ষেত্রে সরকারি উদ্যোগ ও পৃষ্ঠপোষকতায় এগিয়ে এলে ভালো দামের সাথে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হতে পারে বলে মনে করেন তারা।

 

দিনাজপুরের সদর, হাকিমপুর, বিরামপুরসহ বিভিন্ন এলাকার বড় বড় মাছের বাজারগুলোতে ক্রেতারা মাছ কিনে তা দোকান থেকেই কেটে নিয়ে যায়। এরপর মাছ ব্যবসায়ীরা এসব মাছের আঁশ সংগ্রহ করে জমিয়ে রেখে বিক্রি করে বাড়তি আয় করেন। এসব মাছের আঁশ প্রক্রিয়াজাত করে ৬০-৮০ টাকা কেজি দরে কিনে নেন পাইকাররা।

 

হাকিমপুরের হিলি বাজারের মাছের আঁশ বিক্রেতা মাছ ব্যবসায়ী মারুফ জানান, মাছের আঁশগুলো আগে ফেলে দিতাম। এখন চাহিদা থাকায় প্রক্রিয়াজাত করে বিক্রি করে বাড়তি আয় করা যায়। প্রথমে মাছের আঁশগুলো ভালোভাবে ধুয়ে নিয়ে রোদে শুকাতে হয়। এগুলো গত মাসে ৮০ টাকা কেজি দরে কিনে নেন পাইকাররা। কিন্তু করোনার জন্যে দাম কমে এখন ৭০ টাকা কেজি। গত মাসে ২৮ কেজির মতো আঁশ বিক্রি করেছি। এতে মাছ ব্যবসার পাশাপাশি মাসে ২-৩ হাজার টাকা বাড়তি আয় করতে পারছি।

 

তিনি আরও জানান, হিলি বাজারে তিনজন মাছ ব্যবসায়ী রয়েছেন, যারা নিজেদের পাশাপাশি অন্যান্য দোকান থেকেও মাছের আঁশ সংগ্রহ করেন।

 

মাছের আঁশ কেনার পাইকারী ব্যবসায়ী লিটন পারভেজ বলেন, আগে মাছের আঁশ ফেলে দিলেও এখন সবাই সংগ্রহ করে রাখে। দিনাজপুরে এই ব্যবসায় ১০-১২ জন রয়েছে। সকলেই বিভিন্ন মাছের বাজার থেকে আঁশ সংগ্রহ করি। করোনার কারণে বর্তমানে আমরা ৬০ টাকা কেজি দরে আঁশ কিনি। আমরা হাকিমপুর, জয়পুরহাট, বিরামপুর, দিনাজপুর, সৈয়দপুর, ঘোড়াঘাট, বগুড়া, নাটোর, রাজশাহীসহ বিভিন্ন জেলার মাছ বাজার থেকে আঁশ কিনে থাকি। আমরা এগুলো ক্রয় করে ঢাকা পাঠাই। সেখান থেকে চীনে রফতানি হয়। সূূএ:বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» সাপের কামড়ে সাপুড়ের মৃত্যু, সেই সাপকে চিবিয়ে খেলেন আরেক সাপুড়ে!

» শিশু আছিয়ার পরিবারকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালন করল জামায়াত

» জামায়াত আমিরের হার্টে ব্লক, জরুরি সার্জারির সিদ্ধান্ত

» ফেব্রুয়ারির পর অন্তর্বর্তী সরকার থাকবে না: হাবিবুর রহমান

» দুই ছাত্র উপদেষ্টার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে: নাহিদ ইসলাম

» আশুলিয়ার গণহত্যা ছাড়িয়েছে কারবালার নৃশংসতাকেও: তারেক রহমান

» এমন অবস্থা তৈরি করবেন না যাতে হাসিনা ফেরার সুযোগ পায়: মির্জা ফখরুল

» আওয়ামী লীগ আমলে ভোট করা অপরাধ হলে বিএনপি-জামায়াতও অপরাধী, দাবি জাতীয় পার্টির

» ৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ না করলে এনসিবি তা করবে: আখতার হোসেন

» বাংলাদেশকে অত্যাধুনিক ড্রোন প্রযুক্তি দিতে চায় চীন

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

ফেলনা নয় মাছের আঁশ, ৭০-৮০ টাকা কেজি!

মাছের বাজারে ক্রেতারা মাছ কিনে তার আঁশ ছড়িয়ে কেটে নিয়ে আসেন অনেকে। আর মাছ কেনা বা কাটার সময় তার আঁশ ফেলে দেওয়া হতো। কিন্তু আবর্জনা হিসেবে মাছের আঁশ ফেলে দেয়া হলেও এখন আর ফেলনা নয়। বরং এই আঁশের কদর বেড়েছে। এই ফেলনা মাছের আঁশ এখন বিক্রি হয়। আবার রফতানিও হচ্ছে বিদেশে। 

 

এই আঁশ প্রক্রিয়াজাত করে তৈরী হচ্ছে ওষুধের ফয়েল, বিভিন্ন প্রসাধনীসহ অনেক কিছু। আবার মাছ ও মুরগীর খাবারও তৈরী হচ্ছে। ফলে ফেলনা এই মাছের আঁশ বিক্রি করে বাড়তি আয় হচ্ছে এর কেনা-বেচার সাথে জড়িতদের।

 

তবে তারা বলছেন, বাজারে চাহিদা থাকলেও দিনাজপুর থেকে মাছের আঁশ সরাসরি রপ্তানির সুযোগ নেই। তাই ব্যবসায়ীরা বিক্রিত মাছের আঁশের কাঙ্খিত দাম পাচ্ছেন না। এক্ষেত্রে সরকারি উদ্যোগ ও পৃষ্ঠপোষকতায় এগিয়ে এলে ভালো দামের সাথে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হতে পারে বলে মনে করেন তারা।

 

দিনাজপুরের সদর, হাকিমপুর, বিরামপুরসহ বিভিন্ন এলাকার বড় বড় মাছের বাজারগুলোতে ক্রেতারা মাছ কিনে তা দোকান থেকেই কেটে নিয়ে যায়। এরপর মাছ ব্যবসায়ীরা এসব মাছের আঁশ সংগ্রহ করে জমিয়ে রেখে বিক্রি করে বাড়তি আয় করেন। এসব মাছের আঁশ প্রক্রিয়াজাত করে ৬০-৮০ টাকা কেজি দরে কিনে নেন পাইকাররা।

 

হাকিমপুরের হিলি বাজারের মাছের আঁশ বিক্রেতা মাছ ব্যবসায়ী মারুফ জানান, মাছের আঁশগুলো আগে ফেলে দিতাম। এখন চাহিদা থাকায় প্রক্রিয়াজাত করে বিক্রি করে বাড়তি আয় করা যায়। প্রথমে মাছের আঁশগুলো ভালোভাবে ধুয়ে নিয়ে রোদে শুকাতে হয়। এগুলো গত মাসে ৮০ টাকা কেজি দরে কিনে নেন পাইকাররা। কিন্তু করোনার জন্যে দাম কমে এখন ৭০ টাকা কেজি। গত মাসে ২৮ কেজির মতো আঁশ বিক্রি করেছি। এতে মাছ ব্যবসার পাশাপাশি মাসে ২-৩ হাজার টাকা বাড়তি আয় করতে পারছি।

 

তিনি আরও জানান, হিলি বাজারে তিনজন মাছ ব্যবসায়ী রয়েছেন, যারা নিজেদের পাশাপাশি অন্যান্য দোকান থেকেও মাছের আঁশ সংগ্রহ করেন।

 

মাছের আঁশ কেনার পাইকারী ব্যবসায়ী লিটন পারভেজ বলেন, আগে মাছের আঁশ ফেলে দিলেও এখন সবাই সংগ্রহ করে রাখে। দিনাজপুরে এই ব্যবসায় ১০-১২ জন রয়েছে। সকলেই বিভিন্ন মাছের বাজার থেকে আঁশ সংগ্রহ করি। করোনার কারণে বর্তমানে আমরা ৬০ টাকা কেজি দরে আঁশ কিনি। আমরা হাকিমপুর, জয়পুরহাট, বিরামপুর, দিনাজপুর, সৈয়দপুর, ঘোড়াঘাট, বগুড়া, নাটোর, রাজশাহীসহ বিভিন্ন জেলার মাছ বাজার থেকে আঁশ কিনে থাকি। আমরা এগুলো ক্রয় করে ঢাকা পাঠাই। সেখান থেকে চীনে রফতানি হয়। সূূএ:বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com